নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধন হচ্ছে বুধবার (৬ জুলাই)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধন করবেন ‘চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’। এখান থেকেই বাস্তবের রূপ পাবে নতুন আইডিয়া। সেগুলোকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার ক্ষেত্র হবে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরির মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে এই ইনকিউবেটর ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের মূল উদ্দেশ্য— বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকদের উদ্যোক্তা বানাতে সহায়তা করা। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ও আইটি শিল্পের মধ্যে কার্যকর সংযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ও শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমে সুযোগ তৈরি এবং ভৌত অবকাঠামো ও আনুষঙ্গিক সুবিধা তৈরি করা।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ দশমিক ৭ একর জায়গায় দেশের প্রথম আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হয়েছে।
এখানে ২২০ জনের প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিটিসিএল’র মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ আছে এখানে।
২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২২-এর জুন পর্যন্ত নির্ধারিত মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। বাস্তবায়নে ১১৭ কোটি ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও ১১৩ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকায় পুরো কাজ শেষ হয়েছে।
এই প্রকল্পে আছে ১০ তলা পর্যন্ত ডিম্বাকৃতির ইনকিউবেশন ভবন। প্রতি ফ্লোর ৫ হাজার বর্গফুট করে মোট ভবনের আয়তন ৫০ হাজার বর্গফুট। শেখ জামাল ও রোজি জামালের নামে নারী ও পুরুষদের জন্য রয়েছে পৃথক দুটি চার তলা ডরমিটরি। প্রতিটিতে ৪০টি কক্ষ আছে। দুটি ভবনের মোট আয়তন ৪০ হাজার বর্গফুট।
আরও আছে ছয় তলা মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবন। প্রতি ফ্লোর ৬ হাজার বর্গফুট করে। মোট আয়তন ৩৬ হাজার বর্গফুট।
এই ইনকিউবেটরের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার মাঝে সেতুবন্ধন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডরমেটোরি দুটিও উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে আরও যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
অনুষ্ঠানটি গণভবন, আইসিটি মন্ত্রণালয় ও চুয়েট তিন প্রান্ত থেকে একযোগে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হবে।
ইনকিউবেটর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আয় প্রত্যাশিত মাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে চুয়েটে এ আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়।
ইনকিউবেটরে যা থাকছে
চুয়েট ক্যাম্পাসের প্রায় ৫ একর জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর। ভবনের মধ্যে রয়েছে— স্টার্টআপ জোন, আইডিয়া/ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক জোন, ব্রেইনস্ট্রর্মিং জোন, ই-লাইব্রেরি, ডাটা সেন্টার, রিসার্চ ল্যাব, বঙ্গবন্ধু কর্নার, প্রদর্শনী সেন্টার, ভিডিও কনফারেন্সিং কক্ষ, সভাকক্ষ প্রভৃতি।
উদ্যোক্তা ও গবেষকদের জন্য একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ল্যাব, একটি মেশিন লার্নিং ল্যাব, একটি বিগ ডাটা ল্যাব, অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকবোন, একটি সাব-স্টেশন ও সোলার প্যানেল রয়েছে।
এছাড়া ব্যাংক ও আইটি ফার্মের জন্য পৃথক কর্নার, অত্যাধুনিক সাইবার ক্যাফে, ফুড কোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া, রিক্রিয়েশন জোন, মেকার স্পেস, ডিসপ্লে জোন, প্রেস জোন, নিজস্ব পার্কিং সুবিধাও আছে।
মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবনে ২৫০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন অডিটোরিয়াম এবং ৩০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন পৃথক ৮টি কম্পিউটার ল্যাব-কাম-সেমিনার কক্ষ রয়েছে। এছাড়া দুটি মিনি সুপার কম্পিউটার সম্বলিত অত্যাধুনিক গবেষণা ল্যাব স্থাপিত হতে যাচ্ছে শিগগিরই।
স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১
আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ’।
গত ৭ এপ্রিল গণভবনে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’-এর তৃতীয় সভায় ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন বাস্তবায়নে কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন।
‘রূপকল্প ২০৪১’-এর লক্ষ্য দ্রুত অর্জন করতেই ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’ রূপকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে।
এখানকার উদ্ভাবনীকে কীভাবে শিল্পায়ন করা হবে জানতে চাইলে চুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো রফিকুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই ইনকিউবেটরের উদ্দেশ্যে হলো তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সফল উদ্যোক্তা তৈরি। এছাড়া, গবেষণা ও উদ্ভাবনী কাজকে উৎসাহ দেওয়া এবং ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমির মধ্যে নেটওয়ার্ক তৈরি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সরকারের জাতীয় আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা আছে, তার জন্য যোগ্য প্রকৌশলী তৈরি করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে এই ইনকিউবেটর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের পরিচালক অধ্যাপক ড. এম মশিউল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছে আইডিয়া থাকে। কিন্তু তা বাস্তবায়নে এক্সপার্টিজ কম থাকে। পড়ালেখা করে প্রকৌশল মোটামুটি বোঝে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ব্যবসা বোঝে না। তাদের ভাবনাকে ব্যবসায়িক রূপ দিতে যে যোগ্যতা লাগে সেই জায়গা দিচ্ছে ইনকিউবেটর। তাদের যে অবকাঠামোগত সুবিধা দরকার হবে, এখানে তার সবই আছে। ১৮ মাস পর্যন্ত এই সুবিধা বিনামূল্যে গ্রহণ করতে পারবে তারা। যখন আইডিয়া বাস্তবে রূপ নেবে, তখন আমরা ইন্ডাস্ট্রিকে এখানে নিয়ে আসবো। ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে তাদের কোলাবরেশন করিয়ে দেবো।’
জানতে চাইলে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস ইনকিউসবেশন সেন্টার তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা আনন্দিত যে নির্ধারিত সময়ের আগে তিন কোটি টাকা ব্যয় সাশ্রয় করেই প্রকল্পের কাজ শেষ করেছি। আশা করছি এই ৫০ হাজার বর্গফুট জায়গায় আমাদের প্রশিক্ষণ, মেনটরিং ও স্টার্টআপদের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার পরও দুটো ফ্লোরে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সম্পর্কিত ল্যাব তৈরি করছি। যেখানে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি ও প্রয়োজনীয় বিষয়ে চুয়েট শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকরা গবেষণার সুযোগ পাবেন।
তিনি আরও বলেন, নতুন উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে ২০৪১ সাল নাগাদ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার আধুনিক রূপ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ২০৪১ অনুযায়ী একটি বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে আমাদের যে স্মার্ট প্রজন্ম ও উদ্যোক্তা শ্রেণি গড়ে তুলতে হবে, সেই লক্ষ্যে এই শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষর মাধ্যমে বর্তমানে সারা দেশে ৯২টি হাই-টেক পার্ক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক/আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৯টি পার্ক স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে।
দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে ৬৪ জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। বর্তমানে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের জন্য ৩টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। আরও ৩৪টি জেলায় ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

‘যারা সুষ্ঠু ভোটের পক্ষে, মার্কিন ভিসা নিয়ে তাদের উদ্বেগের কারণ নেই: পিটার হাস’
: ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, যারা অবাধ ও সুষ্ঠু......বিস্তারিত
-
এম.সি কলেজের অধ্যক্ষ হলেন আবুল আনাম
: দেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মুরারীচাঁদ কলেজ (এম.সি) কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ...
-
পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) এর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. জহুরুল ইসলাম রোহেল!
: নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ...
-
স্বাধীনতাবিরোধীরা চায় না বাংলাদেশ আত্মমর্যাদাশীল জাতি হোক : মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী
: নিউজ ডেস্ক : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল...
-
আ.লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক শুক্রবার! দ্বাদশ ভোট দুর্ভিক্ষের বার্তা
: নিউজ ডেস্ক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনীতির মাঠে দলীয় নেতাকর্মীদের করণীয়...
-
ধেয়ে আসছে সিত্রাং, সর্তক উপকূলবাসী!
: আন্দামান সাগরের ঘূর্ণাবর্ত প্রতিনিয়ত শক্তি বাড়িয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে।...
-
বিএনপির মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বিশ্বাঙ্গনে নিয়ে যাব: তথ্যমন্ত্রী
: তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান ও বিএনপির মানবাধিকার লঙ্ঘনের...
‘যারা সুষ্ঠু ভোটের পক্ষে, মার্কিন ভিসা নিয়ে তাদের উদ্বেগের কারণ নেই: পিটার হাস’
: ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, যারা অবাধ ও সুষ্ঠু......বিস্তারিত
‘যারা সুষ্ঠু ভোটের পক্ষে, মার্কিন ভিসা নিয়ে তাদের উদ্বেগের কারণ নেই: পিটার হাস’
: ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, যারা অবাধ ও সুষ্ঠু......বিস্তারিত